জেলা করেসপন্ডেন্ট,দৈনিক প্রথম সকাল।
রংপুরে কোরবানীর পশুর চামড়া কেনা নিয়ে চরম নৈরাজ্যের অভিযোগ উঠেছে।আড়তদাররা ইচ্ছেমতো দাম নির্ধারণ করে পানির দামে চামড়া কিনছেন।রংপুরের পুরো চামড়ার বাজার একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে।অদ্য সোমবার ১৭ ই জুন বিকেলে রংপুর নগরীর শাপলা চত্বর এলাকায় সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে রংপুর নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ট্রাকে,রিকশা-ভ্যানে করে শত শত চামড়া নিয়ে আসছেন মৌসুমি ও চামড়া ব্যবসায়ীরা।ব্যবসায়ীদের অভিযোগ সরকার নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী প্রতি পিস চামড়া ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও আড়তদাররা সর্বোচ্চ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকার বেশি দামে চামড়া কিনবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।
পশুর চামড়া বিক্রির ব্যাপারে জেলা প্রশাসন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী এমনকি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের কোনও তৎপরতাও লক্ষ্য করা যায়নি বলে অভিযোগ মৌসুমি ব্যবসায়ী ও নগরবাসীর। ফলে মানুষকে জিম্মি করে সরকারনির্ধারিত মূল্যে বর্গফুট হিসেবে চামড়া না কিনে গড়পড়তা ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা দরে বিক্রি করতে বাধ্য করেছে তারা (সিন্ডিকেট)।
রংপুর নগরীর হাজিরহাট থেকে ১শ ২০টি চামড়া নিয়ে আসা মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী আব্দুর মালেক জানান, প্রতিবর্গফুট মাঝারি গরুর চামড়া সর্বনিম্ন ৭০০ থেকে ৮০০ এবং বড় গরুর চামড়া হাজার থেকে বারোশ দাম হওয়ার কথা। তিনি গড়ে ৬০০ টাকা দরে চামড়া কিনেছেন। গাড়ি ভাড়া আনুষঙ্গিক খরচসহ সাড়ে ৬০০ টাকা পড়েছে।কিন্তু আড়তদাররা ৫০০ টাকার বেশি দামে চামড়া কিনতে রাজি হচ্ছেন না। ফলে তাকে বিপুল পরিমাণ অর্থ গচ্চা দিতে হবে।
অন্য দিকে রংপুর নগরীর স্টেশন এলাকার মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী জামাল ও দর্শনা এলাকার সাজ্জাদুল ইসলাম জানালেন তারা ৫০০ টাকা দরে চামড়া কিনেছেন কিন্তু আসল টাকা দামও বলছেন না আড়তদাররা। রংপুরের চামড়ার আড়তদাররা সিন্ডিকেট করে নিজেদের মনোপলি দাম নির্ধারণ করে মানুষকে জিম্মি করে ফেলেছেন।চামড়ার ন্যায্য মূল্য পাওয়ার ব্যাপারে প্রশাসনের নজরদারির কথা বলা হলেও তাদের কোনও তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তারা।
এ ব্যাপারে রংপুর মেট্রোপলিটান চেম্বার প্রেসিডেন্ট রেজাউল ইসলাম মিলন অভিযোগ করেছেন কিছু সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী তাদের মনোপলি দাম নির্ধারণ করে সাধারণ বিক্রেতাদের জিম্মি করে ফেলেছেন। সরকার ফুট হিসেবে দাম নির্ধারণ করে দিলেও তারা তা মানছেন না।এদিকে রংপুর বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা ডাঃ নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন এবার রংপুর মহানগরীসহ পুরো জেলাতে দুই লাখেরও বেশি গরু কোরবানি হয়েছে।খাসি হয়েছে প্রায় লাখেরও কাছাকাছি।