স্টাফ রিপোর্টার।
অদ্য ২৬ শে সেপ্টেম্বর রোজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১ ঘটিকায় তুরাগ নদীতে ব্রিজের জন্য মানববন্ধন করে কাউন্দিয়াবাসী।রাজধানী ঢাকার মিরপুর এলাকার সন্নিকটে অবস্থিত কউন্দিয়া ইউনিয়নের দুর্ভাগা জনগণ।চারদিকে তুরাগ নদীর তীরে গড়ে ওঠা ৩ লাখ মানুষের বসতি এই জনপদে সারা বছর যাতায়াত করতে হয় নৌকায়।একটি ব্রিজের অভাবে ২ লাখ মানুষের জীবন-জীবিকা ধুকছে।ব্রীজটি নির্মাণ হলে ২/৩ মিনিটে নদী পার হয়ে যেত,সেই জায়গায় নদী পার হয়ে যেতে সময় লাগে ৩০ মিনিটেরও উপরে।
সাভার উপজেলার এই ২২ টি গ্রামের মানুষকে নদী পার হয়েই প্রতিদিন যেতে হয় শহর, হাট-বাজার,অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে।বছরের পর বছর,যুগের পর যুগ ধরে বর্ষাকালীন ও শুকনো মৌসুমে নৌকা দিয়ে তুরাগ নদী পার হয়ে যাওয়ার সময় মানুষ দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়ে মারা যায়।এ এলাকাতে মধ্যরাতে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে ঘাটে কোনো নৌকা পাওয়া যায় না।বিশেষ করে গর্ভবতীদের নিয়ে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়েছে,দুর্ঘটনাও ঘটেছে অনেক।গত পাঁচ বছরে ১৫০ টিরও বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে।যার জন্য আমাদের কাউন্দিয়া পরিবার থেকে মা ও শিশুসহ ৮৬ জন মারা যায়।
মানববন্ধনে কাউন্দিয়া ইউনিয়নবাসী বলেন বর্তমানে কিছুদিন আগে আমাদের ২২ গ্রামের শত বছরের স্বপ্ন কাউন্দিয়া ব্রিজ একনেক সভায় অনুমতি হয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল।কিন্তু গত ৬ই সেপ্টেম্বর নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় ব্রিজের উচ্চতা (তৃতীয় শ্রেণী থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পরিবর্তন করার জটিলতার কারনে ব্রিজ নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার জন্য স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরকে চিঠি দিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়।বর্তমানে ব্রিজটি ৭.৬২ নেভিগেশন ক্লিয়ারেন্স উচ্চতা বিবেচনা করে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে ছাড়পত্র নিয়ে নির্মাণ কাজ শুরু করে ছিলো।
কিন্তু দ্বিতীয় শ্রেণী থেকে তৃতীয় শ্রেণীতে গ্যাজেট প্রস্তাবনা হওয়ায় ব্রিজের উচ্চতা বেড়ে ১২.২ মিটার নেভিগেশন ক্লিয়ারেন্স করার প্রস্তাবনা করে।কিন্তু এই ব্রিজের প্রবেশ মুখের সামনে তুরাগ নদীর উপরে কিছুদিন আগে নির্মিত গাবতলী-আমিনবাজার রাস্তার ১২ লেনের ব্রিজ নির্মাণ উচ্চতা ৭.৬২ মিটার এবং এই ব্রিজের পরবর্তী যে সকল ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে যেমনঃ বিরুলিয়া ব্রিজ,আশুলিয়া ব্রিজ,প্রত্যাশা ব্রিজ, কামারপাড়া ব্রিজ,টঙ্গী ব্রিজ ও টঙ্গী রেলওয়ে ব্রিজের উচ্চতা ৭.৬২ ও ৫.৫ মিটার ধরে নির্মাণ করা হয়েছে।সেই অনুযায়ী সকল ব্রীজের মাঝে অবস্থিত এই কাউন্দিয়া ব্রিজটির উচ্চতা ১২.২ মিটার ধরে নির্মাণ করা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।
উক্ত মানববন্ধনে কাউন্দিয়া ইউনিয়নের ভুক্তভোগী জনগণ অন্তবর্তী কালীন সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর প্রতি আকুল আবেদনে বলেন আপনার কাছে আমাদের ২২ গ্রামের তিন লাখ মানুষের একটাই চাওয়া আপনি আমাদের এই কঠিন অবস্থা থেকে মুক্তি দিয়ে ব্রিজটির নির্মাণ কাজ চালু করার অনুমতি দিবেন।তা না হলে আমাদের দুর্ভোগের দিন আবার শুরু হবে এবং তুরাগ নদী পার হওয়ার সময় আমাদের পরিবার-পরিজনদের মাঝে অনেক লোক দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়ে মারা যাবে।
অবশেষে উক্ত ইউনিয়নের ভুক্তভোগী জনগণ অন্তবর্তী কালীন সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার কাছে আকুল আবেদনে বলেন ২২ গ্রামের তিন লক্ষ মানুষের মুখের দিকে তাকিয়ে আপনি ব্রিজের নির্মাণ কাজ আবার সচল করে দিবেন।আমরা কাউন্দিয়াবাসী আশা করি আপনি আমাদের নিরাশ করবেন না।