ওয়াদুদ আহমেদ,করেসপন্ডেন্ট,কালীগঞ্জ,লালমনিরহাট।
চলমান পরিস্থিতিতে লালমনিরহাটসহ দেশের বিভিন্নস্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা,ভাংচুর,অগ্নি-সংযোগ ও লুটপাটের অভিযোগে লালমনিরহাটে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল এবং প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে।অদ্য রবিবার ১১ শে আগষ্ট দুপুরে জেলার প্রানকেন্দ্র মিশনমোড় গোল চত্বরে হিন্দু সম্প্রদায়ের আয়জনে প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল হয়।লালমনিরহাট জেলার সনাতনী হিন্দুদের আয়োজনে এ কর্মসূচিতে পূজা উৎযাপন কমিটির সভাপতি হিরা লাল রায়,সম্পাদক প্রদীপ চন্দ্র,হিন্দু,বৌদ্ধ,খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ নেতা বিধুভূষণ রায়,ইসকন সভাপতিসহ ও হিন্দু মহাজোটের নেতাকর্মীরা বক্তব্য দেন।
এই সময় বক্তারা বলেন এই মাটি আমাদের,আমরা এই দেশের নাগরিক।এটা আমাদের পিতৃ-পুরুষের সম্পত্তি।আমরা আর নিজ গৃহে পরবাসী হয়ে থাকতে চাই না। আমরা কোথাও যেতে চাই না।১৯৭১ ইং সালে তাদের ধর্মের মানুষজনের উপর হামলার ঘটনার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বক্তারা বলেনসারা দেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের দ্রুত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অভিনন্দন জানিয়ে অবিলম্বে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা,নির্যাতন বন্ধ করার দাবী জানান।
১৯৫২ ইং সালের ভাষা আন্দোলন এবং ১৯৭১ ইং সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সবার সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রেখেছে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজন।দেশের প্রত্যেকটি আন্দোলন,সবশেষ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনেও হিন্দু সম্প্রদায়ের ছেলে-মেয়েরা স্বতস্ফূর্ত অংশ নিয়ে বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে কাজ করে যাচ্ছে।এতো কিছু করার পরও কেন সাম্প্রদায়িক হামলা চালানো হচ্ছে।
এসময় বক্তব্যে নেতারা সকলকে ঐক্যবদ্ধ থেকে দুষ্কৃতকারীদের প্রতিহত করার আহবান জানান। সেইসাথে আইন-শৃঙ্খলা ও সকল দলের নেতাকর্মীদের সহযোগীতা প্রত্যাশা করেন।পরে লালমনিরহাট পৌর মেয়র রেজাউল করিম স্বপন ও বিএনপি নেতা একেএম মমিনুল হক সমাবেশে বক্তব্য দেন সংহতি জানান।প্রায় ২ ঘন্টা ব্যাপি অনুষ্ঠিত মানববন্ধন,সমাবেশ কর্মসূচি শেষে আন্দোলনকারীরা(সনাতনীরা) একটি মিছিল নিয়ে শহরের গোশালা বাজার মন্দির অভিমুখে রওয়ানা দেয়। মিছিলটি শহরের নর্থ বেঙ্গল মোড় এলাকায় পৌছালে সেখানকার একটি ভবনের ছাদ থেকে দুষ্কৃতকারীরা ঢিল ছুড়ে। এতে অন্তত তিনজন আহত হয়।
এ সময় মিছিলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লো সেই ভবনে মিছিলকারীরা হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে।খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর ঘটনাস্থলে যায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।এর আগে সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বিভিন্ন শ্লোগান নিয়ে মিশনমোড় গোল চত্বরে এসে জড়ো হতে থাকে।এক সময় মিশনমোড় এলাকা লোকে লোকারোন্য হয়ে পড়ে। লোকজনের ভিরে এ সময় লালমনিরহাট-রংপুর মহাসড়ক শত শত যানবাহক আটকা পরে যানজটের সৃষ্টি হয়।