বিশেষ প্রতিনিধি,দৈনিক প্রথম সকাল।
সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকান্ডের ঘটনায় ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুর ৮দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।অদ্য বৃহস্পতিবার ১৩ ই জুন দুপুরে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মামলার সুষ্ঠ তদন্তের স্বার্থে সাইদুল করিম মিন্টুকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের ওয়ারি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মাহফুজুর রহমান।
ডিবির একটি সূত্র জানিয়েছে এমপি আনার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাইদুল করিম মিন্টুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়।হত্যাকান্ডের ঘটনায় কিছু তথ্য-প্রমাণ পাওয়ায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।রিমান্ডের জন্য তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।এর আগে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে তাকে আটক করে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়।এরপর তাকে দীর্ঘক্ষণ ধরে আনার হত্যাকান্ডের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।তার আগে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবুকে গ্রেফতার করা হলে তিনি মিন্টুর বিষয়ে তথ্য দেন।তার কাছে পাওয়া তথ্য-উপাত্ত বিচার বিশ্লেষণের পরেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাইদুল করিম মিন্টুকে ডাকা হয়।
গতকাল বুধবার ১২ ই জুন বিকেলে মিন্ট ও রোডে নিজ কার্যালয়ে গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের জানান সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকান্ডের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়েছে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুকে।ডিবির তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে হত্যাকান্ডের বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত রয়েছে। সে তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে মিন্টু যদি কোনো সদুত্তর দিতে না পারেন তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা (গ্রেফতার) নেবেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
তিনি বলেন বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবুকে নিয়ে আসি।আমরা যখন কাউকে নিয়ে আসি অবশ্যই কিছু তথ্য-উপাত্ত থাকে। প্রমাণের ভিত্তিতেই তাকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করি।জিজ্ঞাসাবাদে গ্যাস বাবু অকপটে স্বীকার করেন যে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়া ঘাতক শিমুল ভূঁইয়ার সঙ্গে তিনি বৈঠক করেছিলেন।শিমুল ভূঁইয়া গ্যাস বাবুকে এমপি আনার হত্যার পর ছবি দেখিয়েছেন।
১৬ ই তারিখেই ১৬ ই মে যদি হত্যাকান্ডের তথ্য ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু ও গ্যাস বাবু জেনে থাকেন তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তারা কেন জানালেন না?এটিও অপরাধ।এমন প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশীদ বলেন হ্যাঁ এটি সঠিক।কেন তারা হত্যাকাণ্ডের বিষয় গোপন করলেন এটিই জানতে চাওয়া হচ্ছে।
এমপি আনার হত্যাকান্ডে এখন পর্যন্ত দুজনের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা পেয়েছেন।এমন আরও কতজন রাজনৈতিক ব্যক্তির সম্পৃক্ততা রয়েছে হত্যাকান্ডের পেছনে?এই প্রশ্নের উত্তরে ডিবিপ্রধান বলেন জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক গ্যাস বাবু রিমান্ডে রয়েছেন এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিন্টুকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।এছাড়াও অনেকের সম্পর্কে তথ্য-প্রমাণ রয়েছে। সবকিছু ধীরে-সুস্থে এগোচ্ছি।এমপি আনার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত,যারা নির্দেশ দিয়েছেন এবং এর সঙ্গে যে বা যারাই জড়িত তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।এটাও বলে রাখতে চাই,কারও প্ররোচনায় কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিতে কোনো হয়রানি করা হবে না।
তদন্তকারী কর্মকর্তারা স্বাধীনভাবে সব মামলার ঘটনা তদন্ত করেন জানিয়ে তিনি বলেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমাদের ওপর কোনো চাপ প্রয়োগ করে না।কারণ তারা জানে ডিবির সব চৌকস টিম মামলার তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধী দেশে কিংবা বিদেশে থাকলেও তাদেরকে খুঁজে বের করে আনে।কোনো নিরীহ লোককে হয়রানি করার প্রশ্নই আসে না।