সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট,দৈনিক প্রথম সকাল।
ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার),পিপিএম এর চাকরির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হয়েছে।অদ্য শুক্রবার ৫ ই জুলাই ২০২৪ ইং জন-প্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চুক্তি ও বৈদেশিক নিয়োগ শাখা থেকে এ সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।প্রজ্ঞাপনে আগামী ১২ ই জুলাই ২০২৪ ইং থেকে অথবা যোগদানের তারিখ থেকে পরবর্তী এক বছরের জন্য বাংলাদেশ পুলিশের পুলিশ মহা-পরিদর্শক পদে পুনরায় চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার),পিপিএম গত ৩০ শে সেপ্টেম্বর ২০২২ খ্রিঃ বাংলাদেশের ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।পরবর্তীতে গতবছরের ৯ ই জানুয়ারি এক প্রজ্ঞাপনে দেড় বছরের জন্য পুলিশের মহা-পরিদর্শক (আইজিপি) পদে চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ পান তিনি। যার মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ১১ ই জুলাই।
আইজিপি হিসেবে যোগদানের পূর্বে তিনি র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহা-পরিচালক ছিলেন।তিনি ১৯৮৯ ইং সালের ২০ ই ডিসেম্বর ৮ম বিসিএস (পুলিশ) ব্যাচে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন।চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার),পিপিএম একজন চৌকস,পেশাদার ও দূরদৃষ্টি সম্পন্ন পুলিশ অফিসার হিসেবে সমাদৃত।বর্ণাঢ্য কর্ম-জীবনে তিনি অত্যন্ত সততা,দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সাথে বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট বিশেষ করে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, সিআইডি, ঢাকা ও ময়মনসিংহ রেঞ্জ এবং সর্বশেষ র্যাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তাঁর দীর্ঘ গৌরবময় চাকুরিকালে তিনি ডিএমপি-তে সহকারী কমিশনার,এপিবিএন-এ সহকারী পুলিশ সুপার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিরাজগঞ্জ ও চাঁদপুর জেলায় সার্কেল এএসপি,চাঁদপুর জেলায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং ডিএমপি-তে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।তিনি নীলফামারী জেলার পুলিশ সুপার ছিলেন।তিনি ডিএমপি-তে উপ-পুলিশ কমিশনার,পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে এআইজি (সংস্থাপন) ও এআইজি (গোপনীয়) এবং ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি ছিলেন।
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন,বিপিএম (বার),পিপিএম পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে ডিআইজি (অপারেশনস) ও ডিআইজি (প্রশাসন) হিসেবে অত্যন্ত নিষ্ঠা ও সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি নবগঠিত ময়মনসিংহ রেঞ্জের প্রথম ডিআইজি হিসেবে দায়িত্ব পালনের গৌরবের অধিকারী। তাঁর হাত ধরেই ময়মনসিংহ রেঞ্জের প্রশাসনিক কাঠামো প্রতিষ্ঠা পায়।এরপর তিনি ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হিসেবে অত্যন্ত সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন।অতিরিক্ত আইজিপি হিসেবে পদোন্নতি লাভের পর তিনি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে অতিরিক্ত আইজিপি (এইচআরএম) পদ অলংকৃত করেন।
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন,বিপিএম (বার),পিপিএম বাংলাদেশ পুলিশের সবচেয়ে পুরনো ও বিশেষায়িত ইউনিট সিআইডি প্রধান (অতিরিক্ত আইজিপি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সিআইডিতে কেন্দ্রীয় ফরেনসিক ল্যাবের পাশাপাশি বিভাগীয় পর্যায়ের ল্যাবের সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেন। ফলে মামলার আলামতের ফরেনসিক পরীক্ষা ও এক্সপার্ট ওপিনিয়ন প্রদান প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়।এছাড়া,মামলা তদন্তে পুলিশ সদস্যদের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং তদন্তের মান বাড়াতে তিনি প্রশিক্ষণের উপরও জোর দেন।এতে সিআইডির মামলা তদন্তে গুণগত পরিবর্তন সাধিত হয় এবং মামলা নিষ্পত্তির হারও বৃদ্ধি পায়।
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার),পিপিএম ২০২০ ইং সালের ১৪ ই এপ্রিল বাংলাদেশ পুলিশের এ্যালিট ফোর্স র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-এর মহা-পরিচালকের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।করোনা মহামারীর ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে দায়িত্ব গ্রহণের পর তাঁর নেতৃত্বে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা,স্বাস্থ্য বিধি প্রতিপালন এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে র্যাবের অনবদ্য ভূমিকা ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে।করোনাকালে র্যাব সদস্যদের নিয়মিত অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালনা অব্যাহত রাখা ছিল তাঁর জন্য অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। কিন্তু পেশাদার কর্মকর্তা জনাব চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, বিপিএম (বার),পিপিএম এর কৌশলী কর্মপরিকল্পনা এবং বলিষ্ঠ নেতৃত্বে র্যাব আভিযানিক সফলতার ধারাবাহিকতায় প্রতি বছরই পূর্বের বছরকে ছাড়িয়ে যায়।
র্যাব মহাপরিচালক হিসেবে সহিংস উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদ দমনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে তাঁর উদ্যোগে অপারেশনাল কার্যক্রমের পাশাপাশি জনসচেতনতামূলক পোস্টার,ব্যানার ও ডিজিটাল বিলবোর্ডে জঙ্গিবাদ বিরোধী প্রচারণার পাশাপাশি টেলিভিশনে জঙ্গিবাদ বিরোধী টিভিসি প্রচারের মত ইনোভেটিভ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়।তাঁর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ধর্মীয় চরমপন্থায় দীক্ষিত কিন্তু অপরাধমূলক কার্যক্রমে জড়িত হয়নি এমন ব্যক্তিদেরকে পুনর্বাসন এবং সমাজের মূল ধারায় সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে "নব দিগন্তের পথে" কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।তাছাড়া তাঁর সময়কালে র্যাব বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জঙ্গি বিরোধী অভিযান সফলভাবে পরিচালনা করে।তাঁর নির্দেশনায় র্যাব মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার ও মাদকের বিস্তার রোধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে।
সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত করার ক্ষেত্রে র্যাব সদস্যদের দুঃসাহসিক অপারেশনের উপর ভিত্তি করে "অপারেশন সুন্দরবন" চলচ্চিত্র নির্মাণে তাঁর অনন্য সাধারণ ভূমিকা রয়েছে।বাংলাদেশ পুলিশে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) এবং রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম)-এ ভূষিত হয়েছেন।চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, বিপিএম (বার),পিপিএম বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আন্তর্জাতিক সভা-সেমিনার ও প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন।
দেশের সীমানা ছাপিয়ে তিনি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বসনিয়া-হার্জেগোভিনা,লাইবেরিয়া এবং দারফুরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে দেশের জন্য সম্মান ও গৌরব বয়ে আনেন।চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন,বিপিএম (বার),পিপিএম ১৯৬৪ ইং সালের ১২ ইং জানুয়ারি সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা থানার শ্রীহাইল গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজ বিজ্ঞানে স্মাতক সম্মান ও স্মাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।
ব্যক্তি জীবনে তিনি বিবাহিত এবং তাঁর চিকিৎসক স্ত্রী সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে হলিফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিক্যাল কলেজ,ঢাকায় কর্মরত রয়েছেন।তিনি দুই পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জনক।