স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট,দৈনিক প্রথম সকাল।
কুষ্টিয়ায় বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের ১৩৪তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী লালন স্মরণোৎসব শেষ হয়েছে।গতকাল শনিবার ১৯ শে অক্টোবর রাতে আখড়া বাড়ির মূল মঞ্চে আলোচনা সভার মাধ্যমে এ স্মরণোৎসবের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) শারমিন আখতারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভার প্রধান অতিথি খুলনা বিভাগীয় কমিশনার হেলাল মাহামুদ শরিফ স্মরণোৎসবের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
লালনের রীতি অনুযায়ী ১ লা কার্তিক সন্ধ্যায় অধিবাস,পরদিন ২ রা কার্তিক সকালে বাল্য ও দুপুরে পূর্ণ সেবার মধ্য দিয়ে সাধুসঙ্গ শেষ হওয়ায় শুক্রবার ১৮ ই অক্টোবর বিকেলেই অনেক লালন অনুসারী অতৃপ্ত ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আখড়াবাড়ি ছেড়ে গেছেন।বাকিরা শনিবার সকাল থেকে গুরু কার্য শেষ করে লালনের তীর্থধাম ছাড়াতে শুরু করেন।উল্লেখ্য ১২৯৭ বঙ্গাব্দের ১ লা কার্তিক আধ্যাত্মিক সাধক বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের মৃত্যুর পর থেকে প্রতিবছর এ স্মরণোৎসব পালন করে আসছেন তার অনুসারীরা।এবারে লালন মেলাকে কেন্দ্র করে বিগত কয়েক বছরের তুলনায় সবচেয়ে বেশি দর্শনার্থীদের আগম ঘটে। এর মধ্যে বেশিভাগই ছিল ১৭-৪০ বয়সের মানুষ।
এবারে লালন মেলার মূল চিত্রঃ
লালন আখড়াবাড়ি থেকে গড়াই নদের পাড়ের দূরত্ব অন্তত এক কিলোমিটার।সেই পাড় ধরে অন্তত আরও এক কিলোমিটারজুড়ে ছোট ছোট ছাউনি।সেখানে হাজারো নারী-পুরুষ।বেশিরভাগ গোল হয়ে গাঁজা সেবনে ব্যস্ত ছিল। কেউবা ভাবে,কেউবা ঝিমায়ে আর টং-এর মালিকরা প্রকাশ্য গাঁজা বিক্রি করেন।স্থানীয়দের ভাষ্য কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় লালনের আখড়া বাড়িতে এমন জনসমাগম অন্তত গেল ৩০ বছরে হয়নি।গত বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত তিলধারণের ঠাঁই ছিল না।তবে এ যে এত মানুষ তার সিকিভাগও লালন অনুসারী বা লালন দর্শনে বিশ্বাসী নয়,বেশিরভাগই দর্শনার্থী।
তবে আখড়াবাড়িতে প্রকৃত লালন ভক্ত ও সাধুরা অনেকটাই অতিথির মতো বছরের দ২টি আয়োজনে আসে,যা লালনের জন্ম উৎসব ও মৃত্যুবার্ষিকী।প্রচুর দর্শনার্থীর ঢলে কোণঠাসা লালন ভক্ত অনুসারীরা।এখন অবস্থা এমন যে, যেসব লালন ভক্তরা প্রকৃত সাধনা করেন তারা বারামখানায় আসেন না।এলেও একটি রাত বা লগ্ন কাটিয়ে চলে যান।লালন মেলাকে কেন্দ্র প্রকাশ্যে গাঁজা ও সংশ্লিষ্ট সরঞ্জামাদি বিক্রি হয়।অনুষ্ঠানের ৩ দিন আইন প্রয়োগ সেভাবে না হওয়ায় এবং হাতের কাছে পাওয়ায় তা সেবনে সারাদেশ থেকে হাজার হাজার মানুষ আসে।প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার গাজা বিক্রি হয়।