ইসলামিক ডেস্ক,দৈনিক নাসা নিউজ।
সাহাবি হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হলো,ইয়া রাসুলুল্লাহ,কোন ব্যক্তি শ্রেষ্ঠ?হজরত রাসুলুল্লাহ (সাঃ) জবাব দিলেন এমন মুমিন,যে নিজের জান-মাল দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করে।তারা জিজ্ঞাসা করলেন তারপর কে? তিনি বললেন এমন মুমিন,যে নির্জনে কোনো পাহাড়ের উপত্যকায় বাস করে,সে আল্লাহকে ভয় করে এবং মানুষকে তার অনিষ্ট থেকে নিরাপদ রাখে।সহিহ বোখারিঃ- ২৭৮৬
মানুষের উত্তম-অনুত্তম কিংবা সর্বোত্তম হওয়ার বিষয়টি আপেক্ষিক।তবে প্রকৃত উত্তম মানুষ তারাই, যারা কোরআন-হাদিস তথা আল্লাহ তার রাসুলের দৃষ্টিতে উত্তম। বর্ণিত হাদিসে এরই একটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হয়েছে।মুমিনের কিছু গুণ হিসেবে হাদিসে আরও বলা হয়েছে, প্রতিবেশীর সঙ্গে উত্তম আচরণ করা মুমিনের গুণ। হজরত আবু শুরাইহ খুজায়ি (রাঃ) থেকে বর্ণিত নবী কারিম (সাঃ) বলেছেন আল্লাহর কসম, সে মুমিন নয়,আল্লাহর কসম সে মুমিন নয়,আল্লাহর কসম,সে মুমিন নয়। জানতে চাওয়া হলো, কে ইয়া রাসুলুল্লাহ! তিনি বললেন, যার অনিষ্ট ও উৎপীড়ন থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ থাকে না।সহিহ বোখারিঃ-৬০১৬
হাদিসের উপস্থাপনা থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে আল্লাহর রাসুল (সাঃ) কী প্রতাপ নিয়ে বিষয়টি ইরশাদ করেছেন।কত কঠিন ছিল বলার ভাব,সুতরাং প্রতিবেশীকে নিরপাদে রাখা,তার সঙ্গে উত্তম আচরণ করা মুমিন হিসেবে আমাদের কর্তব্য।সহিহ মুসলিম শরিফের এক হাদিসে এসেছে,আল্লাহর রাসুল (সাঃ) বলেন সে জান্নাতে যাবে না,যার অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ থাকে না।সহিহ মুসলিমঃ-৪৬
আল্লাহর রাসুল (সাঃ) এর এমন প্রতাপান্বিত ইরশাদ,আর এমন ভয়াবহ হুঁশিয়ারির পরও প্রতিবেশীর সঙ্গে আচরণ সুন্দর করা সত্যিই বড় দুর্ভাগ্যের কথা।নির্মাণ কাজসহ চলাফেরায় অসুবিধা সৃষ্টি এবং উচ্চ আওয়াজে গান-বাদ্য বা সঙ্গীত ছেড়ে দেওয়া কতটা অন্যায়মূলক কাজ-এটা সহজেই অনুমেয়।এক কথায় প্রতিবেশীর আরাম ও বিশ্রামের ব্যাঘাত ঘটে,এমন কাজ অন্যায়।এগুলো থেকে বিরত থাকা।হাদিসে আরও ইরশাদ হয়েছে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত নবী কারিম (সাঃ) বলেছেন সে তো মুমিন নয়,যে নিজে তৃপ্তিভরে আহার করে, আর তার প্রতিবেশী থাকে অনাহারে,অর্ধাহারে।আল আদাবুল মুফরাদঃ-১১২
বর্ণিত হাদিস সমূহে মুমিনের চরিত্রের মহাত্ম্য ফুঁটে উঠেছে।আর এমন মুমিন সম্পর্কে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আয়েশা (রাঃ) বলেনআমি আল্লাহর রাসুল (সাঃ)'কে বলতে শুনেছি নিশ্চয়ই মুমিন তার চরিত্রের সৌন্দর্য দিয়ে রোজাদার তাহাজ্জুদগুজার ব্যক্তির মর্যাদা লাভ করতে পারে।সুনানে আবু দাউদঃ-৪৭৯৮
অর্থাৎ আল্লাহর যে বান্দা নিজের আমল-আকিদা,কর্ম ও বিশ্বাসের ক্ষেত্রে সাচ্চা মুমিন হবে,সেই সঙ্গে সুন্দর চরিত্রের অধিকারী হবে,সে যদিও রাতে বেশি নফল নামাজ পড়ে না,বেশি রোজা রাখে না,তবুও সে তার সুন্দর চরিত্রের কারণে ওই ব্যক্তির মর্যাদা লাভ করবে,যে দিনে রোজা রাখে,আর রাতভর নফল নামাজ আদায় করে।মাআরিফুল হাদিস