সৈয়দ মোঃ মোতাহের হোসাইন,করেসপন্ডেন্ট,শাহরাস্তি,চাঁদপুর।
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ বাজারের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত ৬০ জন আহত হয়েছে।দফায় দফায় এই সংঘর্ষে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন ৩৫ জন। সেখান থেকে ৫ জনকে কুমিল্লা ও ঢাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করা হয়েছে।জানা গেছে সম্প্রতি রাজনৈতিক প্রেক্ষপট পরিবর্তন হওয়ার পর হাজীগঞ্জ বাজার সিএনজি স্ট্যান্ড,বাস স্ট্যান্ড ও ফুটপাতের চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে বাজারের পূর্ব পাশে অবস্থিত টোরাগড় এবং পশ্চিম পার্শে অবস্থিত মকিমাবাদ গ্রামের বিএনপি নেতা-কর্মীদেরদের মাঝে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কোন্দলের সৃষ্টি হয়। যার জের ধরে শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দুই গ্রুপ হাজীগঞ্জ বাজারে প্রবেশ করে।এতে জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় ৫ ঘন্টা ব্যাপী ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার ৬নং ওয়ার্ডের সর্দার বাড়ির এক দোকানির সাথে টোরাগড় গ্রামের কয়েকজনের কথা কাটাকাটির ঘটনা ঘটে।এ নিয়ে রাতে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এ ঘটনা রাতেই সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে শান্ত হয়।পরদিন শুক্রবার আগের রাতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফের সন্ধ্যার পর উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হাজীগঞ্জ বাজারে ছড়িয়ে পড়ে।এ সময় পুরো বাজারের সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সহ সড়কে সকল ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে অসংখ্যবার ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এদিকে রাত সাড়ে ৮টার দিকে হাজীগঞ্জ স্টেশন রোডের মুখে ও ডিগ্রি কলেজ সড়কের মুখের প্রধান সড়ক তথা চাঁদপুর কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।
হাসপাতাল সূত্র জানায় উন্নত চিকিৎসার জন্য টোরাগড়ের মোঃ রাহুল (১৬),কচুয়ার ইব্রাহীম (২৪),রান্ধুনীমুড়ার ফয়সাল (২২) ও বিলওয়াই গ্রামের সাইমুন (১৪) ও এক পথচারীকে কুমিল্লা ও ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।অবস্থার অবনতি হলে সাইমুনকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।গতকাল ২১তারিখ রাত আটটায় সাইমুন চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালেই মারা যায়।এদিকে শুক্রবার রাতেই বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী,যুবদলের দফতর সম্পাদক নূরুল ইসলাম সোহেল ও ছাত্রদলের দফতর সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত ভিন্ন ভিন্ন প্যাডে হাজীগঞ্জ উপজেলা ও পৌর বিএনপি,যুবদল ও ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।এর মধ্যে যুবদলের বিরুদ্ধে সংগঠনের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকান্ডে সংশ্লিষ্টতার সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে মর্মে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক জানান রাতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়।সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িতদের আটকে যৌথবাহিনীর অভিযান চলছে।অন্যদিকে এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ কয়েকজন নিহতের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়লেও কোন সূত্র থেকেই এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।