ফারুক আহমেদ,জেলা করেসপন্ডেন্ট লালমনিরহাট।
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর এলাকায় প্রভাবশালী একটি মহল অসহায় রেমিট্যান্স যোদ্ধা মোঃ জিয়াউর রহমান জিয়ার জমি বেআইনিভাবে দখল করার চেষ্টা করছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।আদালতে চলমান মামলার নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও অভিযুক্তরা জমিতে নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছে,যা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং আদালতের আদেশ লঙ্ঘন।
জমির পটভূমিঃ
মামলাটি আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর মৌজার ২ নং এলাকায় অবস্থিত ২৭ শতক জমি নিয়ে। জমিটি সি.এস খতিয়ান নং ৬৩৬ এবং এস.এ খতিয়ান নং ৬১৬ অনুযায়ী, প্রজা হিসেবে গফুর উদ্দিন চৌধুরীর নামে রেকর্ডকৃত ছিল, যা পরবর্তীতে তার ওয়ারিশদের মধ্যে ভাগ করা হয়।বাদীপক্ষ মোঃ জিয়াউর রহমান এই জমির অংশ পেয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখল করে আসছেন এবং এ জমিতে তিনি বিভিন্ন গাছপালা রোপণসহ জমি চাষাবাদ করে আসছেন।
তবে নালিশী জমিতে বি.আর.এস রেকর্ডের ভুল ভিত্তিতে জমিটি সরকারের খাস খতিয়ান হিসেবে ভুলভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন বাদীপক্ষ। তারা বলেন, এ ভুল রেকর্ডের কারণে তাদের জমির স্বত্ব ও অধিকার মেঘাচ্ছন্ন হয়েছে এবং তারা ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।
বেআইনি কার্যক্রমের অভিযোগঃ
অভিযোগে বলা হয়েছে প্রভাবশালী মহল আদালতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমিতে নির্মাণ কাজ শুরু করেছে। আদালতের নির্দেশ ছিল যে, জমিতে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না এবং গাছপালা কাটা যাবে না। তবে নির্দেশের পরদিনই অভিযুক্তরা নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে এসে কাজ শুরু করে এবং প্রায় তিন ফুট পর্যন্ত বাড়ির ভিত্তি নির্মাণ সম্পন্ন করেছে।
বাদীপক্ষ কাজ বন্ধ করতে অনুরোধ জানালে অভিযুক্তরা তাদের হুমকি দেয় এবং হামলার চেষ্টা করে, যার ফলে বাদীপক্ষের লোকজন ঘটনাস্থল থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়। বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিকদের মাধ্যমে উঠে আসে এবং বেআইনি নির্মাণের প্রমাণও সংগ্রহ করা হয়।
আদালতে চলমান মামলাঃ
মামলার মূল বিষয় হলো, সঠিক জমির মালিকানা পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং বি.আর.এস রেকর্ডের ভুল সংশোধন করা। বাদীপক্ষের দাবি, তাদের জমি দীর্ঘদিন ধরে বৈধভাবে তাদের দখলে আছে এবং আদালতের মাধ্যমে তারা তাদের স্বত্ব প্রচারের ডিক্রি পেতে চান।
বাদীপক্ষের দাবিঃ
মোঃ জিয়াউর রহমান আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারী অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, অভিযুক্তদের মধ্যে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা জড়িত থাকায় পরিস্থিতি দিন দিন আরও জটিল হচ্ছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, আদালত দ্রুত এ বিষয়ে সঠিক বিচার প্রদান করবে এবং জমির স্বত্ব পুনরুদ্ধার করবে।
**জমির বিবরণ:**
- মৌজা: দুর্গাপুর
- জমির পরিমাণ: ২৭ শতক
- সি.এস খতিয়ান নং: ৬৩৬
- এস.এ খতিয়ান নং: ৬১৬
- বি আর এস খতিয়ান নং: ৮১০
- দাগ নং: ৩১২
এই ঘটনা প্রমাণ করে যে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল কিভাবে আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে জমি দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আদালতের দ্রুত পদক্ষেপ এবং ন্যায়বিচারই হতে পারে এই সমস্যার সমাধান।